দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে হাওর প্লাবিত হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির
পরিসংখ্যান প্রচার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের এক অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ
ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত অন্তত দুজন মন্ত্রী নাম প্রকাশ না করার
শর্তে বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ওই দুই মন্ত্রী
বলেন, ‘‘বৈঠকে এক অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী হাওরের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে
বিভিন্ন মন্ত্রী ও সচিবদের দেওয়া পরিসংখ্যান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বলছেন হাওরে বন্যায় এত মাছ মরেছে, এত ধান নষ্ট
হয়েছে। কিন্তু এই পরিমাণ কে মেপেছে? কিসের ভিত্তিতে এ ক্ষতির পরিমাণ
নির্ধারণ করা হলো?’ এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বেশ উত্তেজিত দেখা গেছে।’’
উল্লেখ্য, গত রবিবার সচিবালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ
সম্মেলনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান
বলেন, ‘হাওরে বন্যায় মোট এক হাজার ২৭৬ মেট্রিক টন মাছ নষ্ট হয়েছে এবং তিন
হাজার ৮৪৪টি হাঁস মারা গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্
বলেন, ‘বন্যায় দুই লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যেখান থেকে ছয় লাখ
মেট্রিক টন চাল পাওয়া যেত। তবে এতে আমাদের খাদ্য ঘাটতি হবে না।কারণ দেশের
অন্য অঞ্চলে খাদ্য উৎপাদন বেশি হয়েছে। এছাড়া আউশ এবং আমন চাষে আমরা কৃষকদের
প্রণোদনা দেবো। ফলে দেশে খাদ্যে কোনও ঘাটতি থাকবে না।’
পানি
সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান বলেন, ‘হাওর এলাকায় বিদ্যমান
বাঁধগুলো ষাটের দশকের পরিকল্পনায় করা। এবারের বন্যা জলবায়ু পরিবর্তনের
কারণে হয়েছে। এবারের ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা নেবো বাঁধগুলো কী পরিমাণ উঁচু
করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের
প্রকল্পগুলো উপজেলা পর্যায় থেকে বাস্তবায়ন করা হবে। যা বাস্তবায়ন করবে
উপজেলা প্রশাসন।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল
হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘বন্যকবলিত এলাকার মানুষদের সহায়তায় সোমবার থেকে
কর্মসূচি শুরু হবে। পরবর্তী একশ দিনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে মাসে ত্রিশ
কেজি চাল এবং নগদ ৫শ’ টাকা দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ
কর্মসূচির আওতায় সুবিধা পাবেন তিন লাখ ত্রিশ হাজার পরিবার। তবে সংখ্যা আরও
বাড়তে পারে। এ কর্মসূচিতে সরকারের ৩০/৩৫ হাজার মেট্রিক টন চাল এবং ৫০ কোটি
টাকা প্রয়োজন। তবে যারা রিলিফ নেবেন না তাদের জন্য ১৫ টাকা কেজি দরে চাল ও
১০ টাকা কেজি দরে ন্যায্যমূল্যে চাল বিক্রি অব্যাহত থাকবে।’
উৎসঃ বাংলাট্রিবিউন
Monday, April 24, 2017
Subscribe to:
Post Comments (Atom)


No comments:
Post a Comment